আমরা অনেকেই ছবি তোলার জন্য Google Photos ব্যবহার করি। স্মার্টফোন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি ব্যাকআপ নেওয়া, সহজে বন্ধু-পরিবারের সাথে শেয়ার করা—এসবের জন্য Google Photos সত্যিই অসাধারণ। কিন্তু, আপনি কি জানেন এর ভেতরে অনেক গোপন ক্ষমতা এবং ফিচার লুকিয়ে আছে যা আপনার ডিজিটাল লাইফকে আরও সহজ করে তুলতে পারে?
Google Photos শুধু একটি ফটো স্টোরেজ প্ল্যাটফর্ম নয়; এটি একটি শক্তিশালী এডিটিং এবং অর্গানাইজিং টুল। এর অনেক অ্যাডভান্সড ফাংশনালিটি রয়েছে যা গড় ব্যবহারকারীর চোখ এড়িয়ে যায়। আজকের এই বিস্তারিত পোস্টে আমরা আলোচনা করব Google Photos এর গোপন ফিচার যেগুলো আপনি জানেন না এবং কীভাবে সেগুলো কাজে লাগাবেন।
এই ফিচারগুলো জানা থাকলে আপনার ছবির সংগ্রহকে আরও গুছিয়ে নিতে পারবেন, পুরনো ছবি বা ডুপ্লিকেট খুঁজে বের করতে পারবেন, এমনকি পেশাদার স্তরের ছবির এডিটিংও করতে পারবেন। চলুন, শুরু করা যাক সেইসব অসাধারণ টিপস ও ট্রিকস সম্পর্কে যা Google Photos-কে আরও কার্যকর করে তুলবে।
Google Photos পরিচিতি (সংক্ষিপ্ত)
Google Photos হলো গুগল কর্তৃক নির্মিত একটি ক্লাউড-ভিত্তিক ফটো এবং ভিডিও শেয়ারিং ও স্টোরেজ সার্ভিস। এটি অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস, এবং ওয়েব প্ল্যাটফর্মে বিনামূল্যে পাওয়া যায়। এর প্রধান কাজ হলো আপনার ডিভাইস থেকে ছবি ও ভিডিওগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে গুগল ক্লাউডে ব্যাকআপ নেওয়া, যাতে ডিভাইস নষ্ট হলেও ছবি সুরক্ষিত থাকে।
শুরুর দিকে এটি বিনামূল্যে আনলিমিটেড স্টোরেজ দিত, যা এখন গুগল অ্যাকাউন্টের ১৫ জিবি ফ্রি স্টোরেজের মধ্যে সীমাবদ্ধ (বা কেনা স্টোরেজ প্যাকেজের অংশ)। এটি ছবিকে তারিখ, স্থান, এবং বিষয়বস্তু (যেমন: ‘সূর্যাস্ত’, ‘বিড়াল’, ‘খাবার’) অনুযায়ী সাজিয়ে রাখতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে।
গোপন বা কম পরিচিত ফিচারগুলোর তালিকা
আপনার দৈনন্দিন ফটো ম্যানেজমেন্টের অভিজ্ঞতা পাল্টে দিতে পারে এমন কিছু গোপন এবং শক্তিশালী Google Photos ফিচার এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
-
Google Photos এর ব্যাকগ্রাউন্ড কপি সেটিংস ও ক্যামেরা ব্যাকআপ কাস্টমাইজেশন
অনেকেই জানেন না যে, আপনি কোন ফোল্ডারগুলো ব্যাকআপ নিতে চান তা কাস্টমাইজ করতে পারেন। ডিফল্টভাবে শুধু ক্যামেরা ফোল্ডার ব্যাকআপ হয়। কিন্তু, হোয়াটসঅ্যাপ ছবি বা স্ক্রিনশট ফোল্ডারও ব্যাকআপ নিতে পারবেন।
এর জন্য
Settings → Back up & sync → Device folders back up-এ গিয়ে নির্দিষ্ট ফোল্ডার নির্বাচন করতে হয়। এটি ডেটা বাঁচায় এবং অপ্রয়োজনীয় ছবি স্টোরেজে জমা হওয়া বন্ধ করে। -
অটো-এডিটিং: স্মার্ট কালার, ব্রাইটন, HDR টুইকস
Google Photos অ্যাপের এডিটিং টুলের ভেতরে লুকানো থাকে এক-ক্লিকে ফটো এনহ্যান্সমেন্টের সুযোগ। শুধু একটি ছবি ওপেন করে ‘Edit’ বাটনে ক্লিক করুন, সেখানে ‘Suggestions’ বা ‘Enhance’ অপশন পাবেন।
AI স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি বিশ্লেষণ করে সেরা কালার, কনট্রাস্ট, এবং ব্রাইটনেস অ্যাডজাস্টমেন্ট প্রয়োগ করে। বিশেষত, ‘HDR’ বা ‘Dynamic’ ফিল্টারগুলো ছবিকে এক নতুন মাত্রা দেয় যা ম্যানুয়াল এডিটিং-এর ঝামেলা কমায়।
-
অবজেক্ট রিমুভাল / ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার (Magic Eraser)
Google Photos-এর অন্যতম শক্তিশালী এবং প্রায় গোপন ফিচার হলো ‘Magic Eraser’। এই টুল ব্যবহার করে ছবির অবাঞ্ছিত মানুষ, খুঁটি বা বস্তু মুছে ফেলা যায়।
পিক্সেল ফোন ব্যবহারকারীরা এটি সরাসরি পেলেও, অন্যান্য অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা Google One সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে এই টুলটি অ্যাক্সেস করতে পারেন। এটি এডিট মোডের ‘Tools’ সেকশনে পাওয়া যায়। (এখানে Magic Eraser অপশনের স্ক্রিনশট রাখুন)।
-
ফেস গ্রুপিং এবং স্মার্ট অ্যালবাম (People & Pets Grouping)
Google Photos স্বয়ংক্রিয়ভাবে একই ব্যক্তির ছবিগুলো এক গ্রুপে ফেলে দেয়। এটিকে ‘Face Grouping’ বলা হয়।
এছাড়াও পোষা প্রাণী (Pets)-এর ছবিও এটি আলাদাভাবে গ্রুপ করে। এটি এনাবল করলে সহজেই আপনি আপনার সন্তানের বা প্রিয় পোষ্যের সবগুলো ছবি একসাথে খুঁজে পাবেন এবং একটি স্মার্ট অ্যালবাম তৈরি করতে পারবেন। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী একটি গোপন ফিচার যা দ্রুত ছবি খোঁজার জন্য দরকারি।
-
ভিডিও মেমোরি তৈরির কাস্টম মিউজিক ও থিম
Google Photos মাঝে মাঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ছবি ও ভিডিও দিয়ে সুন্দর ‘Memories’ বা কোলাজ ভিডিও তৈরি করে। বেশিরভাগ মানুষই জানেন না যে, আপনি এই ভিডিওগুলোর মিউজিক ও থিম কাস্টমাইজ করতে পারেন।
‘Memories’ সেকশনে যান, একটি অটো-জেনারেটেড ভিডিও নির্বাচন করুন, এবং ‘Edit’ অপশনে গিয়ে মিউজিক পরিবর্তন করুন। এতে আপনার প্রিয় ভিডিও ক্লিপগুলো আরও ব্যক্তিগত ছোঁয়া পাবে।
-
ক্যাপশন বা টেক্সট সার্চ — ছবি থেকে টেক্সট খোঁজা (OCR)
এটি এমন একটি গোপন ফিচার যা অনেকেই জানেন না: Google Photos-এর সার্চ বারটি ছবির ভেতরের লেখা (OCR – Optical Character Recognition) শনাক্ত করতে পারে।
ধরুন, আপনি একটি রেস্টুরেন্টের মেনু বা একটি সাইনবোর্ডের ছবি তুলেছেন, আপনি সার্চ বারে সেই সাইনবোর্ডের লেখা টাইপ করলেই ছবিটি খুঁজে পেয়ে যাবেন! এটা পরীক্ষার নোট বা রেসিপি খুঁজে বের করার জন্য খুবই কাজের।
-
লুকিং গুড বাই ডিফল্ট (Auto Enhance) ও Undo History
আপনি যদি কোনও ছবি এডিট করেন, Google Photos সেই এডিটিং-এর ইতিহাস ধরে রাখে। এর মানে হলো, আপনি যেকোনো সময় এডিটিং পরিবর্তন বা সম্পূর্ণভাবে ‘Undo’ করতে পারেন, এমনকি কয়েক মাস পরেও।
ছবি ওপেন করে ‘Edit’ অপশনে যান, এবং দেখবেন যে এডিটিং অপশনগুলোর পাশে ‘Undo’ বাটন রয়েছে। এটি একটি সেফটি নেট হিসেবে কাজ করে যাতে এডিটিং-এর সময় ভুল হলেও চিন্তা না করতে হয়।
-
স্মার্ট ল্যাবেল ও সার্চ (উদাহরণ: “sunset in dhaka”)
Google-এর AI আপনার ছবির বিষয়বস্তু, স্থান, এমনকি মেজাজ (Mood) অনুযায়ী স্মার্ট ল্যাবেল তৈরি করে। সার্চ বারে শুধু “sunset in dhaka” বা “birthday party 2023” লিখুন, এবং AI স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই ছবিগুলো খুঁজে বের করবে।
স্থান বা ইভেন্ট ট্যাগিং-এর জন্য এটি একটি শক্তিশালী টুল। এটি এমন একটি Google Photos এর গোপন ফিচার যেগুলো আপনি জানেন না, অথচ আপনার সময় বাঁচাতে পারে।
-
প্রাইভেসি সেটিংস: লাইব্রেরি শেয়ারিং কনফিগারেশন
আপনার সম্পূর্ণ ছবির লাইব্রেরি একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি (যেমন: আপনার স্বামী/স্ত্রী) বাছার সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শেয়ার করার অপশন আছে। এর জন্য
Settings → Sharing → Partner Sharing-এ যান।আপনি নির্দিষ্ট তারিখের পরের ছবি বা শুধু নির্দিষ্ট ব্যক্তির ছবিই শেয়ার করার জন্য বেছে নিতে পারেন। এটি ম্যানুয়ালি ছবি শেয়ার করার ঝামেলা কমায় এবং গোপনীয়তা রক্ষা করে একটি নির্দিষ্ট বাছা ছবি শেয়ার করার সুযোগ দেয়।
-
কম্প্রেশন বনাম অরিজিনাল কোয়ালিটি ব্যাখ্যা ও স্টোরেজ অপশন
পূর্বে Google Photos দুটি স্টোরেজ অপশন দিত: ‘High quality’ (সংকুচিত) এবং ‘Original quality’ (অপরিবর্তিত)। এখন সব ছবিই অরিজিনাল কোয়ালিটিতে ব্যাকআপ হয়, যা আপনার অ্যাকাউন্টের স্টোরেজ ব্যবহার করে।
এই অপশনটি
Settings → Back up & sync → Upload size-এ পাওয়া যায়। আপনি যদি ক্লাউড স্টোরেজ বাঁচাতে চান, তবে কম্প্রেশন বিকল্প নির্বাচন করতে পারতেন, যদিও এখন এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অরিজিনাল কোয়ালিটি বেছে নেয়। এই সেটিংস সম্পর্কে ধারণা রাখা জরুরি। -
অফলাইন এক্সেস ও ডাউনলোড টিপস
আপনি আপনার প্রিয় অ্যালবাম বা ছবিগুলো অফলাইনে দেখার জন্য সেভ করে রাখতে পারেন। ওয়াইফাই না থাকলেও বা ডেটা না থাকলেও এই ছবিগুলো দেখতে পারবেন।
অ্যাপটি ব্যবহার করার সময়, ছবিগুলো স্ক্রল করলেই সেগুলো ডিভাইসে সাময়িকভাবে ক্যাশ হয়। আর নির্দিষ্ট অ্যালবাম অফলাইনে সেভ করার অপশনও অ্যাপের ভেতরে লুকিয়ে আছে, যা ভ্রমণকারীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি গোপন ফিচার।
-
Google Lens ইন্টিগ্রেশন (রেস্টুরেন্ট মেনু, টেক্সট কপি ইত্যাদি)
আপনার Google Photos অ্যাপের ভেতরেই Google Lens-এর ক্ষমতা লুকিয়ে আছে। যেকোনো ছবি ওপেন করে Lens আইকনে ক্লিক করুন।
আপনি যদি কোনও ফুলের ছবি তোলেন, Lens আপনাকে সেই ফুলের নাম বলতে পারবে। অথবা, কোনও বিদেশী ভাষার সাইনবোর্ডের ছবি তুললে সেটি সরাসরি অনুবাদ করে দেবে। এটি কেবল ছবি স্টোরেজ নয়, বরং একটি অ্যাডভান্সড ইনফরমেটিক্স টুল।
-
কীভাবে দ্রুত ফটো সিলেক্ট করে একসাথে ডাউনলোড বা ডিলিট করবেন
একসাথে অনেকগুলো ছবি সিলেক্ট করা বেশ দ্রুত করা যায়। প্রথম ছবিটি টিপে ধরে রাখুন, এরপর স্ক্রিনে হাত রেখে সোয়াইপ করুন। দেখবেন দ্রুত অনেকগুলো ছবি নির্বাচিত হয়ে যাচ্ছে।
এই পদ্ধতিটি বাল্ক ডিলিট, শেয়ার বা ডাউনলোড করার জন্য খুবই কার্যকর, যা প্রতিটা ছবি আলাদাভাবে নির্বাচন করার সময়ের অপচয় রোধ করে।
-
অব্যবহৃত ছবি খোঁজা ও ডুপ্লিকেট ক্লীনআপ টিপস
আপনার স্টোরেজ খালি করার জন্য Google Photos ‘Storage Management’ অপশন নিয়ে এসেছে। এখানে আপনি ঝাপসা ছবি, বড় ভিডিও ফাইল, এবং ডুপ্লিকেট ছবিগুলো দ্রুত শনাক্ত করতে পারবেন।
Settings → Back up & sync → Manage storage-এ যান। এটি আপনাকে দেখাবে কোন ছবি বা ভিডিওগুলো মুছে ফেললে সবচেয়ে বেশি জায়গা খালি হবে। এই ফিচারটি আপনার স্টোরেজ অপটিমাইজেশনের একটি গোপন চাবিকাঠি। -
Shared Libraries: পরিবারের সাথে স্বয়ংক্রিয় শেয়ারিং কনফিগারেশন
লাইব্রেরি শেয়ারিংয়ের মতো, Shared Libraries আপনাকে আপনার পরিবারের সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবি শেয়ার করার অনুমতি দেয়। আপনি বেছে নিতে পারেন যে কোন তারিখ থেকে বা কাদের ছবি শেয়ার করা হবে।
স্বামী/স্ত্রী বা পরিবারের সদস্যদের সাথে সদ্য তোলা ছবি শেয়ার করার জন্য এটি একটি দারুণ উপায়। এটি আপনাকে ম্যানুয়াল শেয়ারিং-এর ঝামেলা থেকে বাঁচায় এবং মুহূর্তগুলো ভাগ করে নিতে সাহায্য করে।
প্রতিটি ফিচারের Practical Tips
উপরে উল্লেখিত শক্তিশালী Google Photos এর গোপন ফিচার যেগুলো আপনি জানেন না সেগুলোর কিছু ব্যবহারিক টিপস নিচে ধাপে ধাপে দেওয়া হলো:
-
Magic Eraser ব্যবহার:
ছবি ওপেন করুন > Edit ট্যাপ করুন > Tools-এ যান > Magic Eraser নির্বাচন করুন। এখন, ছবির যে অবজেক্টটি সরাতে চান, সেটির ওপর আঙুল দিয়ে আলতো করে গোল করুন বা ব্রাশ করুন। রিমুভ করার আগে এবং পরের ছবিটি ভালো করে দেখুন।
-
ফেস গ্রুপিং এনাবল:
Google Photos অ্যাপ খুলুন > প্রোফাইল আইকনে ট্যাপ করুন > Photos settings-এ যান > Group similar faces বা ‘Face Grouping’ অপশনটি চালু করুন। এই সেটিংসটি অঞ্চলভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে একবার চালু হলে AI ছবিগুলো সাজাতে শুরু করে দেবে।
-
স্মার্ট সার্চ ব্যবহার:
সার্চ বারে শুধু ‘Photo of’ বা ‘My Photos with’ না লিখে সরাসরি বস্তুর নাম বা স্থানের নাম লিখুন (যেমন: “cat on the sofa” বা “wedding ceremony”)। Google Photos-এর AI খুবই স্মার্ট, যা আপনি কল্পনাও করেননি।
-
বাল্ক ডাউনলোড/ডিলিট (ওয়েব):
কম্পিউটারে Google Photos-এর ওয়েবসাইটে যান। প্রথম ছবিটিতে ক্লিক করুন, তারপর Shift কী চেপে ধরে একদম শেষের ছবিতে ক্লিক করুন। এতে মাঝের সব ছবি দ্রুত একসাথে সিলেক্ট হয়ে যাবে। এরপর উপরে ডানদিকে ডাউনলোড বা ডিলিট অপশন ব্যবহার করুন।
-
ব্যাকআপ কাস্টমাইজেশন:
অপ্রয়োজনীয় ফোল্ডার (যেমন: রিসিট, স্ক্রিনশট) থেকে ব্যাকআপ বন্ধ করে দিন।
Settings → Back up & sync → Device folders back up-এ গিয়ে আপনার প্রয়োজনীয় ফোল্ডারগুলি ছাড়া বাকিগুলোর টগল বন্ধ করে দিন।
গোপন ফিচার ব্যবহার করার সময় সতর্কতা ও প্রাইভেসি ফ্যাক্টর
Google Photos-এর সুবিধাগুলো ব্যবহার করার সময় প্রাইভেসি নিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। গোপন ফিচারগুলোর কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রাইভেসি ফ্যাক্টর নিচে উল্লেখ করা হলো:
-
Face Grouping Privacy:
যদিও Face Grouping আপনার ছবি ম্যানেজমেন্ট সহজ করে, এটি একটি বায়োমেট্রিক ডেটা ব্যবহার করে। আপনার অঞ্চলে Face Grouping চালু করার আগে এর প্রাইভেসি পলিসি জেনে নিন। প্রাইভেসি সুরক্ষার জন্য, প্রয়োজন না হলে এই ফিচারটি বন্ধ রাখুন।
-
Location Metadata (EXIF Data):
আপনার ছবিতে ক্যামেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থানের তথ্য (GPS Location) সংযুক্ত করে। আপনি যখন ছবি শেয়ার করেন, তখন এই তথ্যও শেয়ার হয়ে যায়। ছবি শেয়ার করার আগে
Settings → Sharing → Remove geo locationঅপশনটি চেক করে নিন। -
Data Sharing ও টার্গেটেড বিজ্ঞাপন:
গুগল আপনার ছবি স্ক্যান করে কী কী আছে তা বোঝার চেষ্টা করে (যেমন: ‘সূর্যাস্ত’, ‘বিড়াল’)। যদিও গুগল সরাসরি আপনার ছবি বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যবহার করে না, এই বিশ্লেষণ আপনার সামগ্রিক গুগল প্রোফাইল তৈরি করতে সাহায্য করে। এই বিশ্লেষণ সীমিত করতে My Activity সেটিংসে যেতে পারেন।
স্টোরেজ ম্যানেজমেন্ট ও খরচ অপ্টিমাইজেশন টিপস
Google Photos এখন আর বিনামূল্যে আনলিমিটেড স্টোরেজ দেয় না। তাই স্টোরেজ ম্যানেজমেন্ট একটি অপরিহার্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই গোপন ফিচারগুলো ব্যবহার করে আপনার স্টোরেজ অপটিমাইজ করুন:
-
স্টোরেজ ম্যানেজার ব্যবহার:
Settings → Back up & sync → Manage storage-এ যান। এখানে আপনি বড় ফাইল, ঝাপসা ছবি, এবং স্ক্রিনশটগুলোর একটি তালিকা পাবেন। এই টুলটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেখাবে কোন ফাইলগুলো মুছে ফেললে সবচেয়ে বেশি স্টোরেজ খালি হবে। -
অপ্রয়োজনীয় ব্যাকআপ মুছুন:
আপনার যদি হাজার হাজার স্ক্রিনশট বা ডুপ্লিকেট থাকে, তাহলে ম্যানুয়াল ক্লিনিং-এর পরিবর্তে স্টোরেজ ম্যানেজারের মাধ্যমে সেগুলো দ্রুত মুছে ফেলুন।
-
Google One প্যাকেজ নির্বাচন:
যদি আপনার আরও স্টোরেজ প্রয়োজন হয়, তবে Google One সাবস্ক্রিপশন প্ল্যানগুলি বিবেচনা করুন। ছোট প্যাকেজ (যেমন 100GB) দিয়ে শুরু করুন, যা সাশ্রয়ী। প্রয়োজন অনুযায়ী স্টোরেজ প্যাকেজ নির্বাচন করা খরচ বাঁচানোর একটি অন্যতম টিপস।
উন্নত ব্যবহারকারীর টিপস (Power User Tips)
যারা Google Photos-কে আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে চান, তাদের জন্য কিছু উন্নত ব্যবহারকারীর টিপস নিচে দেওয়া হলো:
-
Google Drive Integration (সীমিত):
যদিও Google Photos এবং Drive-এর মধ্যে সরাসরি সিঙ্ক এখন আর নেই, আপনি চাইলে নির্দিষ্ট অ্যালবামগুলো Drive-এ ডাউনলোড করে নিতে পারেন বা Drive থেকে ছবি আপলোড করতে পারেন। দুটি প্ল্যাটফর্মের মাঝে ডেটা স্থানান্তর সহজ করার জন্য ওয়েব ইন্টারফেস ব্যবহার করা সুবিধাজনক।
-
অ্যালবাম শর্টকাট:
আপনার সবচেয়ে বেশি দেখা অ্যালবামগুলোর জন্য আপনার ফোনের হোম স্ক্রিনে শর্টকাট তৈরি করুন। এতে এক ক্লিকে সেই অ্যালবামে পৌঁছে যাওয়া যাবে। অ্যালবামের তিনটি ডট মেনুতে গিয়ে এই অপশনটি খুঁজে নিন।
-
কিবোর্ড শর্টকাট (ওয়েব):
Google Photos-এর ওয়েব সংস্করণে কিছু কিবোর্ড শর্টকাট ব্যবহার করা যায়:
- ছবি ওপেন করতে: Enter বাটন
- পরের ছবিতে যেতে: Right Arrow (→)
- আগের ছবিতে যেতে: Left Arrow (←)
-
বাল্ক অ্যাকশন উইজার্ড:
যদি আপনি হাজার হাজার ছবি একবারে ডিলিট বা ডাউনলোড করতে চান, তবে ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে বাল্ক অ্যাকশনগুলো সবচেয়ে দ্রুত করা যায়, যা মোবাইল অ্যাপের তুলনায় দ্রুত গতি প্রদান করে।
প্রশ্নোত্তর (FAQs)
Google Photos এর গোপন ফিচার ও ব্যবহার নিয়ে পাঠকদের মনে প্রায়ই যেসব প্রশ্ন আসে, তার উত্তর নিচে দেওয়া হলো:
- Google Photos কি সত্যি অগণিত ছবি ফ্রী রাখে?
Comments (0)
Leave a Comment